শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ রোববার (১৯ জানুয়ারি) ৩০ জুন, ২০২৪ অর্থবছরের জন্য ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করে। ডিভিডেন্ড ঘোষণার কারণে এদিন কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন সীমা (সার্কিট ব্রেকার) ছিল না। এর প্রেক্ষিতে ব্লক মার্কেটে কোম্পানিটির ১৪ হাজারের বেশি শেয়ার পাবলিক মার্কেটের চেয়ে তিন গুণ বেশি দামে কেনাবেচা হয়। এ নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এদিন স্টক এক্সচেঞ্জের মূল মার্কেটে শেয়ারটির দাম ৩৩ টাকা ৩০ পয়সায় ক্লোজিং হয়। কিন্তু ব্লক মার্কেটে প্রতিটি শেয়ার ৯০ টাকা দরে লেনদেন হয়। ব্লক মার্কেটে পাওয়ার গ্রীড শেয়ারের লেনদেন ‘অস্বাভাবিক’ মনে হয়েছে সকলের কাছে। ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এ নিয়ে তদন্ত করার কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘‘এটি অস্বাভাবিক শেয়ার লেনদেন। এখানে ম্যানিপুলেশন হতে পারে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও বিএসইসি গঠিত টাক্সফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল আমিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘এটি অবশ্যই ম্যানিপুলেশন। যেখানে শেয়ারটি ৩৩ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে তিন গুণ দামে ৯০ টাকায় বেচাকেনা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’’
ডিএসইর লেনদেনের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ জানুয়ারি ব্লক মার্কেটে ৯০ টাকা দরে ১৪ হাজার ২০৫টি শেয়ার এক ট্রেডে ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৪৫০ টাকায় লেনদেন হয়। মূল বাজারে ওই দিন শেয়ারটির সর্বশেষ দর ছিল ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা।
দিনশেষে মূল বাজারে ১৫.৯০ শতাংশ দর কমে সেদিন শীর্ষ দর হারানোর তালিকায় ডিএসইতে প্রথম অবস্থানে ছিল পাওয়ার গ্রীড কোম্পানির শেয়ার। আগের কর্মদিবসে শেয়ারটির দর ছিল ৩৯ টাকা ৬০ পয়সা। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ উঠেছিল ৫৩ টাকা ২০ পয়সা।
ডিএসই জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার ধারণা, একজন ট্রেডার তার নিয়ন্ত্রণে থাকা বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিও থেকে শেয়ারটি বিক্রি করেছেন তারই আরেক গ্রাহকের কাছে। নানা কারণেই তা হতে পারে। তদন্ত করলেই হয়ত আসল বিষয়টি উঠে আসবে।
সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫ টাকা ১ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১০ টাকা ১১ পয়সা। একইদিন কোম্পানিটি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৪) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে করে। এতে লোকসান হয় শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৮১ পয়সা। যা আগের বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ১ টাকা ৪২ পয়সা।