পৃথিবীর কোনো দেশেই গণতন্ত্র পারফেক্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের গণতন্ত্রও পারফেক্ট দাবি করি না। তবে পারফেক্ট করার পথে আমাদের চেষ্টা আছে, প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে আন্তরিক।’
শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ বিএনপির যারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেন তাদের গণতন্ত্র ছিল কারফিউ গণতন্ত্র। ১৫ ফেব্রুয়ারির হ্যাঁ/না ভোট, যেখানে হ্যাঁ ভোট ছিল ১১৪ শতাংশ। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার। গণতন্ত্রকে তারা ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। নির্বাচনব্যবস্থাকে প্রহসন এবং তামাশায় পরিণত করেছিল। তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি ভূতের মুখে রাম নাম।’
দুর্নীতিবাজদের তালিকা করলে বিএনপি নেতাদের নাম সবার আগে আসবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি আমলে হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতি আর লুটপাটের ভবন। এখন তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে। বিএনপি আমলে দুর্নীতি করা দলের কাউকে কি কোন শাস্তি দিয়েছে তারা? প্রশাসনের কাউকে শাস্তি দিয়েছে? আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে। সরকার বিএনপির মতো ইমিউনিটি কালচার গড়ে তোলেনি।’
এসময় নিজের উদাহরণ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি মন্ত্রী যদি দুর্নীতি করি, সেটা কি বিনাবিচারে শেষ হয়ে যাবে? প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব খবর আছে, কারা কী করে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসেও কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে।’
দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করছে আওয়ামী লীগ সরকার- বিএনপি নেতাদের এমন দাবি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে অর্থনীতির খারাপ অবস্থা। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে দুর্নীতি, বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতির বেসামাল অবস্থা। বাংলাদেশ সেখানে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামাল দিয়ে যাচ্ছে, ভারসাম্য রক্ষা করছে। দেশের অর্থনীতি যদি ধ্বংস হবে তাহলে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক কীভাবে বাংলাদেশকে সম্ভাবনার দেশ হিসেবে সাপোর্ট করছে? সেটা মির্জা ফখরুলদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।’
‘বাংলাদেশ সেবাদাস রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’- বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেবাদাস কে কার? বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কারও সেবাদাস নয়। বিএনপি নেতাদের মুখের বিষ আরও উগ্র হয়েছে। তারা একরাশ ব্যর্থতার স্তূপীকৃত আবর্জনার উপর দাঁড়িয়ে মানসিক অশান্তিতে ভুগছেন। মানসিক অস্থিরতায় তারা সত্য বলতে ভুলে গেছেন। মিথ্যার বেসাতি করে যাচ্ছেন।’
বিএনপির দলের ভেতরেই গণতন্ত্র নেই, তারা দেশের গণতন্ত্র কীভাবে আনবে- এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগে যথাসময়ে সম্মেলন হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম কয়বার কত বছরে সম্মেলন না হয়েই বিএনপির মহাসচিব? মহাসচিব পদে মির্জা ফখরুলের কি বৈধ অধিকার আছে? সম্মেলন ছাড়া মহাসচিব কত বছর?’
এ সময় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এটি প্রক্রিয়াধীন, তদন্ত চলছে। দুদক মামলা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে বেনজীরের বিদেশযাত্রার বিষয়টি তিনি অবহিত নন বলে গণমাধ্যমকে জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান প্রমুখ।