1. [email protected] : শেয়ারখবর : শেয়ারখবর
  2. [email protected] : Admin : Admin
  3. [email protected] : nayan : nayan
  4. [email protected] : news uploder : news uploder
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন

আইপিও আসতে লাখ টাকার এগ্রো অর্গানিকা কোটি টাকায় রুপান্তর

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩

শেয়ারখবর প্রতিবেদক: অ্যাগ্রো অর্গানিকাও শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের আগে হুট করে কয়েক লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি কয়েক কোটি টাকা হয়ে গেছে। কয়েক বছর ধরে শেয়ারবাজারে আইপিওতে আসার আগেই হঠাৎ করে পরিশোধিত মূলধন এমন বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সমালোচনার মধ্যে রয়েছে। যে বৃদ্ধি নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশ্নও রয়েছে। যেটার সত্যতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। যে কারনে কোন কোম্পানির অর্থ উত্তোলনের অনুমোদনের আগে এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

অ্যাগ্রো অর্গানিকা শেয়ারবাজারে আসাকে কেন্দ্র করে বোনাস শেয়ারসহ প্লেসমেন্টে দ্রুত পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া রয়েছে বিতর্কিত শেয়ার মানি ডিপোজিটকে শেয়ার রুপান্তর। অ্যাগ্রো অর্গানিকার খসড়া প্রসপেক্টাসের ২১ পৃষ্টা অনুযায়ি, ৩৮.৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের প্রায় পুরোটাই বা ৯৯.৩০ শতাংশ ইস্যু করা হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরে। যার প্রায় পুরোটাই শেয়ার মানি ডিপোজিট ও বোনাস শেয়ার থেকে ইস্যু করা হয়েছে।

অ্যাগ্রো অর্গানিকা কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান সক্ষমতার অনেকাংশ উৎপাদন ও বাজারজাতকরন করতে পারছে না। তারপরেও সেই কোম্পানি ব্যবসা সম্প্রসারনে ভবন নির্মাণ, মেশিনারীজ ও ইক্যুপমেন্ট কেনার জন্য শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়াতে চায়। অথচ এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের ব্যবসায় সক্ষমতার ৭০.৬৪% ব্যবহার করতে পেরেছে।

অ্যাগ্রো অর্গানিকা মূলত একটি চাউল ব্যবসায়ী কোম্পানি। এই কোম্পানির প্রসপেক্টাসে প্রকাশিত সর্বশেষ ৯ মাসের যে আয়-ব্যয়ের তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেখানে মোট বিক্রির ৩৬.২৩ কোটি টাকার আয় বা বিক্রির মধ্যে চাউল থেকে এসেছে ২৩.০৫ কোটি টাকা বা ৬৪%।

হিসাববিদদের মতে, বিএএস-৩৬ অনুযায়ি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ইমপেয়ারম্যান্ট লস হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কোম্পানিগুলো তা না করে সম্পদ ও মুনাফা বেশি দেখায়। এক্ষেত্রে অ্যাগ্রো অর্গানিকাও এর ব্যতিক্রম না।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) করপোরেট গভর্নেন্স ফাইন্যান্সিয়াল বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেকোন কোম্পানির ক্ষেত্রে ইমপেয়ারমেন্ট লস হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কোম্পানিগুলো গতানুগতিকভাবে তা না করে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়ে থাকে।

প্রসপেক্টাসের ২০ পৃস্টা অনুযায়ি, কোম্পানিটিতে জমি ও জমি উন্নয়নবাবদ ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে জমি উন্নয়নবাবদ সম্পদ কত টাকার ও জমির পরিমাণ কত। তার কোন বিস্তারিত তথ্য নেই। অনেকটা তথ্য গোপন করার মতো করেছে অ্যাগ্রো অর্গানিকা।

বিএএস-১৬ অনুযায়ি, ল্যান্ড ডেভোলপমেন্ট অবচয়যোগ্য সম্পদ। এরমধ্যে প্রাচীর, রাস্তা ইত্যাদি সম্পদ থাকে। যেগুলোর নির্দিষ্ট আয়ুস্কাল আছে। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ল্যান্ড ডেভোলপমেন্টের উপর অবচয় চার্জ করে না।

প্রসপেক্টাস অনুযায়ি, অ্যাগ্রো অর্গানিকা প্রিমিয়াম পাওয়ার যোগ্য হলেও শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ারবাজারে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার পদ্ধতিতে শেয়ারপ্রতি ২১.৫৯ টাকা পাওয়ার যোগ্য বলে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের ব্যবসায় কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা পরিশ্রম করে এই দরের যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তবে কোম্পানিটি অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যু করবে। কিন্তু একটি কোম্পানির সমস্যা থাকলেই শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে আসতে চায় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, কোনো ভালো কোম্পানি দীর্ঘদিন ব্যবসা করে শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ারবাজারে আসতে পারে না। এক্ষেত্রে যেসব কোম্পানির সমস্যা বা দূর্বলতা আছে, সেসব কোম্পানিই শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে আসতে পারে।

কোম্পানিতে স্বচ্ছতা আনতে বা বজায় রাখতে প্রত্যেক তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক রাখা বাধ্যতামূলক করেছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় এসএমইতে আসা বিগত কোম্পানিগুলোতেও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে দেখা গেছে। কিন্তু অ্যাগ্রো অর্গানিকাতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ না দেওয়ার কারন কি?

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ শ্রম আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে অ্যাগ্রো অর্গানিকা। কিন্তু নিজেদের স্বার্থে শেয়ারবাজার থেকে যখন টাকা নেওয়ার দরকার পড়েছে, তখন এই ফান্ড গঠন করেছে। শ্রম আইন অনুযায়ি, ২০০৬ সাল থেকে নিট আয়ের ৫ শতাংশ হারে ফান্ড গঠন করতে হলেও অ্যাগ্রো অর্গানিকা কর্তৃপক্ষ শেয়ারবাজারে আসাকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে এই ফান্ড গঠন করেছে। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে অতিরঞ্জিত মুনাফা ও বেশি করে সম্পদ দেখাচ্ছে।

শেয়ারখবর/

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ