পদ্মা সেতুর মাওয়া পয়েন্টে উত্তাল ঢেউ। নদী ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এমন অবস্থায় সেতুর স্প্যানবাহী ক্রেন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশংকা তৈরি হয়েছে। ফলে শতভাগ প্রস্তুত থাকার পরও পদ্মা সেতুর ৩২তম স্প্যান আপাতত বসছে না। উত্তাল ঢেউয়ের কাছে হার মেনে মাওয়া থেকে জাজিরায় সরিয়ে নোঙ্গর করা হয়েছে স্প্যানবাহী ক্রেনটি।
এ প্রসঙ্গে পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে বসানো বাকি আছে ১০টি। এর মধ্যে ৫টি স্প্যান প্রায় সম্পন্ন। মাওয়া পয়েন্টে উত্তাল ঢেউ। তরঙ্গের তীব্রতা বোঝা যাচ্ছে সেতুর খুঁটিগুলো নিচে পানি প্রবাহের দিকে তাকালে। মাওয়াতে স্রোতের বেগ ২.৪১ মিটার। ক্রেনটি স্রোতের বেগ ১ মিটারের কম হলেই যেতে পারে। তাই ৩২তম স্প্যান নদীর প্রতিকূল অবস্থার কারণে বসানো যাচ্ছে না।
সেতুর প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ। যে ৪১টি স্প্যান বসে হবে ৬.১৫ কিলোমিটারের পদ্মাসেতু তার সবগুলো পদ্মাপাড়ে। এর মধ্যে বসানো হয়ে গেছে ৩১টি। যার ফলে সাড়ে ৪ কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান। বাকি আছে মাত্র ১০টি। এই ১০টির মধ্যে মাওয়া স্প্যান ফেব্রকিশেন ইয়ার্ডে ৫টির কাজ প্রায় সম্পন্ন। বাকি ৫টির এখনও জায়ান্ট ওয়েল্ডিং কাজ বাকি।
স্প্যানের উপর সড়ক এবং ভেতরে থাকে রেলপথ। এই সড়কপথ এগিয়েছে প্রায় এক কিলোমিটার। আর রেলপথ দুই কিলোমিটার। স্প্যানের উপর স্লাব বসিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হয়। পুরো পদ্মাসেতুতে লাগবে ২৯১৭টি রোড স্লাব, এর মধ্যে বসানো হয়েছে ৬৮৯টি। আর রেলওয়ে স্লাব লাগবে ২৯৫৯ টি। যার মধ্যে বসানো হয়েছে ১১৭৬টি। এখন লক্ষ্য আগামী বছরের ৩০ জুন সেতুর কাজ শেষ করা।
মূল সেতুর প্রকৌশলীরা আরও জানান, এই মুহূর্তে নদীর প্রতিকূল অবস্থা ছাড়া আর কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। জুলাইয়ের মধ্যে সবগুলো স্প্যান বসানোর কথা ছিল। কারোনার কারণে চীনে আটকা পড়েছিল পদ্মাসেতুর স্পেনের কিছু মালামাল। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী নভেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতুর বাকি ১০টি স্প্যান বসিয়ে দেওয়া হবে।
বাংলার কন্ঠ/০৭ জুলাই, ২০২০/এ এইচ