আগের কর্মদিবসের মতো রোববারও (০৮ ডিসেম্বর) পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। তবে এদিন আগের কর্মদিবসের মতো বড় পতন হয়েছে। এদিন পতন কমলেও প্রায় আড়াইশত কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। এতোগুলো কোম্পানির শেয়ার দর কমার ফলে শেয়ারবাজারে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৩’শতের নিচে নেমে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার বাংলারেদশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগে বেশ কয়েকটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পরিচাকদের মোটা অংকের জরিমানার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিএসইসির এই সিদ্ধান্তের ফলে শেয়ারবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে ইতিবাচকতার পরিবর্তে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়। এই নেতিবাচক ধারণা থেকেই শেয়ারবাজারে আজকে এতোগুলোর কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে।
বাজারকে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়ে আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নানামূখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগের ফলে মাঝে মাঝে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। তবে বেশিরভাগ কর্মদিবসই নেতিবাচক প্রবণতায় ডুবে থাকে শেয়ারবাজার। রোববারও শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে। এদিন সূচকের উত্থানে শুরু হয় লেনদেন। মাত্র এক মিনিট পর পতনে নেমে যায় সূচক। এরপর লেনদেনের বাকি সময় পতনেই ডুবে থাকে সূচক। শেষ পর্যন্ত এই পতনই অব্যাহত থাকে শেয়ারবাজারে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানামূখী উদ্যোগের পরও স্থিতিশীলতায় ফিরছে না সূচক। বিষয়টা দুর্ভাবনার বিষয়। শেয়ারবাজার হচ্ছে দেশের অর্থনীতির অন্যতম একটা অংশ। এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের এভাবে ধুকতে থাকা সমীচীন নয়। শুধু নিয়ন্ত্রক সংস্থা নয় শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীলতায় ফিরাতে সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। বাজারকে স্থিতিশীলতায় ফিরাতে কঠোর সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হলেও তা প্রয়োগ করতে হবে। শুধু কারসাজির অভিযোগে কোম্পানিগুলোর কর্তা ব্যক্তিদের কিছু অর্থ দণ্ড করলেই বাজারের প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায় শেষ হয়ে যায় না। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বাজার নিয়ে আরো কঠোর সিদ্ধাস্ত নিতে হবে।
রোববারের বাজার পর্যালোচনা
আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪.৯৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৮১ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে‘ডিএসইএস’ ৭.১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৬ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৩.২৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯০৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন ডিএসইতে ২৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৩৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আজ লেনদেন কমেছে ৪১ কোটি ৮০ লাখ টাকার বা ১২ শতাংশ।
ডিএসইতে লেনদেন আজ হওয়া ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৮৭টির বা ২২.০২ শতাংশের, কমেছে ২৪৮টির বা ৬২.৭৮ শতাংশের এবং দর পরিবর্তন হয়নি ৬০টির বা ১৫.১৯ শতাংশের। অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৭৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪৬টির, কমেছে ১০৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৬টির।
এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪২ পয়েন্ট কমে দাঁডিয়েছে ১৪ হাজার ৫৩৮ পয়েন্টে।