ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের অনিল আম্বানিসহ ২৫ ব্যবসায়ীকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজার থেকে নিষিদ্ধ করেছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (এসইবিআই)। তাদের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ অননুমোদিত ব্যবসায় সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর রয়টার্স।
ভারতের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইবিআই একই অভিযোগে অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ২৫ কোটি রুপি জরিমানাও করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, নিজের মালিকানাধীন রিলায়েন্স গ্রুপের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স থেকে তহবিল অন্যত্র সরিয়ে নিতে স্কিম চালু করেছিলেন আম্বানি। রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স মূলত আবাসন ও অবকাঠামো নির্মাণে ঋণ দেয়। এসইবিআইয়ের ভাষ্য, ‘প্রতারণামূলক’ ওই স্কিমের মাধ্যমে অর্থ সরিয়ে অযোগ্য ঋণগ্রহীতাদের দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে বেশির ভাগ ঋণগ্রহীতা এমন প্রোমোটারদের সঙ্গে যুক্ত ছিল, যারা নিজ নিজ কোম্পানির সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখেন।
এ নিষেধাজ্ঞার ফলে আম্বানিসহ অন্য ব্যবসায়ীরা পুঁজিবাজারে প্রবেশ, শেয়ার কেনাবেচা বা অন্য যেকোনো লেনদেন করতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে রিলায়েন্স গ্রুপের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আর্থিক সেবা, অবকাঠামো ও টেলিকমিউনিকেশনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা আছে রিলায়েন্স গ্রুপের। ২০০৬ সালের জুলাইয়ে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র গ্রুপ হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃত্বে আছেন অনিল আম্বানির ভাই মুকেশ আম্বানি।
অনিল আম্বানির নেতৃত্বাধীন এ গ্রুপের তিনটি প্রধান প্রতিষ্ঠান হলো রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস, রিলায়েন্স ক্যাপিটাল ও রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। তিনটি প্রতিষ্ঠানই দেউলিয়া বা ঋণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্সের শেয়ারের দাম ৫ শতাংশ কমেছে। এছাড়া রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের শেয়ার প্রায় ১৩ শতাংশ ও রিলায়েন্স পাওয়ারের শেয়ারের দাম ৫ শতাংশ কমেছে।
এসইবিআই অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে মূলত দুটি অভিযোগ এনেছে। এর মধ্যে আছে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ তহবিল অননুমোদিত খাতে সরিয়ে নিয়ে কোম্পানি ও এর শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি করা এবং আর্থিক হিসাবনিকাশে কারসাজি করে শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে তথ্য গোপন করা।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স থেকে ৯ হাজার কোটি রুপির বেশি ঋণ অজ্ঞাত ঋণগ্রহীতাদের দেয়া হয়েছিল, যাদের আর্থিকভাবে ঋণ পরিশোধের কোনো সক্ষমতা ছিল না।