1. [email protected] : শেয়ারখবর : শেয়ারখবর
  2. [email protected] : Admin : Admin
  3. [email protected] : nayan : nayan
  4. [email protected] : news uploder : news uploder
শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৪ অপরাহ্ন

ডিবি থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে নিরাপত্তার কথা বলে রাখা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে। আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

তারা হলেন মো. নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ডিবি থেকে বদলি করার একদিনের মধ্যে ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হলো।

আজ দুপুর দেড়টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন ডিবি হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদের বাবা মো. বদরুল ইসলাম। তিনিসহ মোট পাঁচজন ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

নাহিদের চাচা জাহিদুল ইসলাম বলেন, নাহিদ আমাদের সঙ্গে আছে, তাকে নিয়ে বাসায় যাচ্ছি।

নাহিদের বাবা বদরুল ইসলাম বলেন, আমরা নাহিদকে নিয়ে বাড্ডার বাসায় ফিরছি। নাহিদসহ ছয় সমন্বয়ককেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকতাও জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৬ জুলাই শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। পরদিন শনিবার (২৭ জুলাই) রাতে সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং রবিবার (২৭) ভোরে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে নুসরাত তাবাসসুমকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

সমন্বয়কদের সঙ্গে নাস্তা করলেন ডিবিপ্রধান

২৮ জুলাই দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, সমন্বয়কদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ডিবিতে আনা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়নি। তাদের নিয়ে পরিবারকে দুশ্চিন্তা না করার অনুরোধ করেন তিনি।

সেদিনই সমন্বয়কদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে নাস্তা করার কয়েকটি ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন হারুন অর রশীদ। ক্যাপশনে হারুন লিখেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই ওদের ডিবি কার্যালয়ে এনে তাদের সঙ্গে কথা বললাম। কী কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে! ওদের কথা শুনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের নানা পরিকল্পনার কথা জানানোর পর তাদের উদ্বেগ দূর হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টিম ডিবি ডিএমপি বদ্ধপরিকর।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার

ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় ২৮ জুলাই রাতে ভিডিও বার্তায় আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময় অন্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম উপস্থিত ছিলেন। তারা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচার দাবি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান।

ভিডিও বার্তায় নাহিদ ইসলাম বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত এবং নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। সুষ্ঠু-তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

নাহিদ বলেন, আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা এরই মধ্যে পূরণ করেছে সরকার। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। এ মুহূর্ত থেকে আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।

তবে তাদের প্রত্যাহার কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেন ডিবি হেফাজতের বাইরে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্য নেতারা। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

‘জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না’

‘ডিবি অফিসে যাকে তাকে ধরে নিয়ে যাবেন, তারপর খাবার টেবিলে বসাবেন। এভাবে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না’ এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বিক্ষোভের সময় ছাত্রদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের বিষয়ে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ করে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার (২৯ জুলাই) এমন মন্তব্য করেন।

শুনানির এক পর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ‘টিভিতে দেখেছি, এই ছয়জন (সমন্বয়ক) কাটাচামচ দিয়ে খাচ্ছে।’

এ পর্যায়ে আদালত বলেন, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’

হারুনকে বদলি, নতুন ডিবি প্রধান আশরাফুজ্জামান

বুধবার (৩১ জুলাই) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ডিবি থেকে ডিএমপি সদর দপ্তরের ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগে বদলি করা হয়। গোয়েন্দা শাখায় পদায়ন করা হয় ডিএমপির লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহা. আশরাফুজ্জামানকে।

হারুন অর রশীদ ২০২২ সালের ১৩ জুলাই ডিএমপির গোয়েন্দা শাখায় দায়িত্ব পান। তার আগে ২০২১ সালের মে মাসে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার হিসেবে গোয়েন্দা বিভাগে পদায়ন হয় তার। এর আগে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার এবং নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ