বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি ছিল ইতিবাচক। চার কার্যদিবসের লেনদেনে দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই সূচক বেড়েছে। পাশাপাশি দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বাজার মূলধনের দিক দিয়ে অন্যতম শীর্ষ কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ইউপিজিডিসিএল), রেনাটা ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) শেয়ারের ভ্যালুয়েশন গত সপ্তাহে বেড়েছে ১ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। আর এ সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ৭ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা।

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ৯২০ কোটি টাকা ভ্যালুয়েশন বেড়েছে ইউপিজিডিসিএলের। এরপর সবচেয়ে বেশি রেনাটার শেয়ার ভ্যালুয়েশন বেড়েছে ৩৯০ কোটি টাকা। আইসিবির ভ্যালুয়েশন বেড়েছে ৩০০ কোটি টাকা। আর স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ভ্যালুয়েশন বেড়েছে ১২০ কোটি টাকা।

প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইতে ঈদুল আজহার ছুটির পর সোমবার সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ শুরু হয়। এদিন এক্সচেঞ্জটির প্রধান সূচক ডিএসইএক্সে ৫৭ পয়েন্ট যোগ হয়। এর পরের তিন কার্যদিবসে ডিএসইএক্স বেড়েছে যথাক্রমে ২৭, ৮ ও ৫৮ পয়েন্ট। গেল সপ্তাহের চার কার্যদিবসে সূচকটি বেড়েছে ১৫০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

ডিএসইএক্সের পাশাপাশি বিদায়ী সপ্তাহে ৫৫ পয়েন্ট বেড়েছে ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০। ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৪৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে সূচকটি, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৪২১ পয়েন্ট। অন্যদিকে চার কার্যদিবসে ৩৫ পয়েন্ট বেড়েছে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস। বৃহস্পতিবার ১ হাজার ১১ পয়েন্টে অবস্থান করছে সূচকটি, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৯৭৭ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে স্টক এক্সচেঞ্জটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৭২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

ডিএসইতে গেল সপ্তাহে বেশির ভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে সপ্তাহ শেষে দর বেড়েছে ২৬০টির, কমেছে ৪২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টির বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেনের ২২ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল সাধারণ বীমা খাত। মোট লেনদেনের ১৯ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ খাত। এছাড়া ৯ শতাংশ দখলে নিয়ে প্রকৌশল খাত তৃতীয়, ৮ শতাংশ নিয়ে বস্ত্র খাত চতুর্থ এবং ৬ শতাংশ দখলে নিয়ে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত পঞ্চম অবস্থানে ছিল।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০ সিকিউরিটিজ ছিল যথাক্রমে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, গ্রামীণফোন, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ভিএফএস থ্রেড ডায়িং ও সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

সমাপনী দরের ভিত্তিতে ডিএসইতে গেল সপ্তাহে দর বৃদ্ধির শীর্ষ কোম্পানিগুলো ছিল পিপলস ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস, এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স ও নাভানা সিএনজি লিমিটেড।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সিএসসিএক্স ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে ৭ হাজার ৫১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৭ হাজার ২৫০ পয়েন্ট। নির্বাচিত ৩০ কোম্পানির সূচক সিএসই ৩০ ইনডেক্স ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়ে ১০ হাজার ৭৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১০ হাজার ৩৮৯ পয়েন্টে।

সিএসইতে চার কার্যদিবসের লেনদেনে মোট ৯৭ কোটি ২৭ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৯৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২০৮টির, কমেছে ৩৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টির বাজারদর।