ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার অন্যতম আসামি সিয়াম হোসেনকে নিয়ে কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি গ্রামের বাগজোলা খালে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। অভিযানের শুরুতেই সেখানে সিয়ামের দেখিয়ে দেওয়া স্থানে পাওয়া গেছে একাধিক হাড়গোড়।
রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এর আগে ১৬ দিনের বেশি তল্লাশি চালিয়েও কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। এ দিন অভিযান শুরুর মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই উদ্ধার হয় হাড়গোড়। তবে, সেই হাড় এমপি আনারের কি না তা স্পষ্ট নয়। কারণ ফরেন্সিক পরীক্ষায় তা জানা যাবে। জানা গেছে, একটি ঝোপের পাশ থেকে হাড়গোড়গুলি উদ্ধার করা হয়। খবর- আনন্দবাজার পত্রিকার
এর আগে কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসনে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে কয়েক কেজি ছোট ছোট মাংসের টুকরো উদ্ধার করেছিল ভারতের সিআইডি। সেই মাংস কি আনারের, তা জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ বার হাড়গুলিও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জানায় সিআইডি।
গত শুক্রবার সীমান্তের কোনও জায়গা থেকে সিয়ামকে গ্রেফতার করে ভারতের সিআইডি। শনিবার তাঁকে বারাসত আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিন পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তার পর আজ সকাল থেকেই এই আসামিকে সঙ্গে নিয়ে খালে তল্লাশি অভিযানে নামে কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ ও ভারতীয় নৌসেনা। অভিযানের শুরুতেই সিয়ামের দেখিয়ে দেওয়া স্থানে তলাশি শুরু করা হয়।
এর আগে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদ দেহাংশ ফেলে দেওয়ার যে স্থান বলেছিল, এ দিন সিয়াম সেই স্থানের পরিবর্তে ভিন্ন স্থান দেখায়। আর সেখানে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয় একাধিক হাড়গোড়। প্রাথমিকভাবে দেখে সেগুলো মানুষের হাড়ই মনে হয়েছে।
সিয়ামের দাবি- উদ্ধার হাড়গুলো আনোয়ারুল আজিম আনারের শরীরের। যদিও সিআইডি জানিয়েছে, এগুলো এমপির দেহাংশ কিনা জানার জন্য হাড়গুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজীম। বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পরে গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলে না তিনবারের এই সংসদ সদস্যের।
পরে জানা যায়, গত ১৩ মে সঞ্জীবা গার্ডেনে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সাংসদ খুন ও লাশ গুমের যুক্ত ছিল সিয়াম। নিউটাউনের অভিজাত ওই সঞ্জীবা গার্ডেনের সিসিটিভির ফুটেজেও সিয়ামকে দেখা যায়। এদিকে এ ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও সিয়ামের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। এবার নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তে আরও গতি আনতে চান ভারতের সিআইডির কর্মকর্তারা।