নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অপ্রতিষ্ঠানিক শ্রমিকরা অনেক মেধাবী। তাদের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগাতে পারলেই অর্থনীতি ফের চাঙ্গা হবে।’
করোনাকালীন বিশ্ব অর্থনীতির বেহালদশা নিয়ে ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘করোনা ভাইরাস আসার পর আমরা দেখেছি লক্ষ লক্ষ অপ্রতিষ্ঠানিক শ্রমিক শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে গেছে। এদের কেউ আমাদের জন্য রান্না করেছেন। কেউ বাড়ি পাহারা দিয়েছেন। কেউ আমাদের ছেলেমেয়ে দেখাশোনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনা আসার পরে এরা দেখল শহরে তাদের আশ্রয় নেই। এখানে কিছু নেই। কোনো জীবন নেই, বেঁচে থাকার অর্থ নেই। সুতারং তারা তাদের আশ্রয়ে ফিরে গেছে। করোনার সবচেয়ে বেদনার দিক এটাই।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘এই মানুষদের কথা আমাদের ভাবতে হবে। অর্থনীতি এদের কথা ভাবে না। তারা এটাকে ইনফরমাল সেক্টর বলে। ইনফরমাল সেক্টর হলো তাদের সঙ্গে আমাদের কিছুই করার নেই, তারা আমাদের অর্থনীতির অংশ নয়। কিন্তু আমরা যদি তাদের অর্থ দিতে পারি, সাহায্য করতে পারি, তারা মই বেয়ে উপরে উঠবে। কারণ তারা জানে কীভাবে জীবনের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। কিন্তু আমরা তাদের অবহেলা করি।’
ড. ইউনূস আরো বলেন, ‘করোনা আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছে গোটা পৃথিবীর অর্থনীতি যে মডেলে চলেছে, সেটা ভুল ছিল। তাই আমাদের নতুন কওে ভাবতে হবে। অর্থনীতির পুরোনো মডেলে ফিরে যাওয়া পৃথিবীর জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। করোনা সমাজের দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শহরে ভিন্ন অঞ্চলের শ্রমিক ছিল। আমাদের জন্য কাজ করা সেই মানুষদের আমরা বের করে দিয়েছি। সুতরং আমাদের পুরোনো অর্থনীতিতে কেন ফিরব? পৃথিবীর সম্পদ অল্প কিছু মানুষের হাতে ঘোরাফেরা করে, যা দিয়ে অধিকাংশ মানুষের কিছু করার থাকে না। সুতারং সম্পদের ঘনত্ব বাড়ানোর এই সিস্টেমে আমরা কেন ফিরব? যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অধিকাংশ মানুষের চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, সেখানে আমরা কেন ভরসা রাখব? করোনা আমাদের নতুন করে ভাবার সুযোগ দিয়েছে। সুযোগ দিয়েছে অর্থনীতির কাঠামোতে পরিবর্তন আনার।’
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী গত চার মাসে বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহামারি বিশেষজ্ঞ জোহান গিসিকে, হার্ভার্ডের কেনেডি স্কুলের অধ্যাপক নিকোলাস বার্নস, আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন এবং ভারতীয় শিল্পপতি রাজীব বাজাজ।ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতা