কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবু আহাদ আল মামুনকে মারধর করে অপহরণচেষ্টার অভিযোগে কুষ্টিয়া সদর মডেল থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫-৩০ জনকে আসামি করে মামলা করছেন প্রার্থী নিজেই। আজ মঙ্গলবার সকালে মামলার পর তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল সোমবার (৬ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের বড় বাজার বড় স্টেশনের সামনে কবি আজিজুর রহমান সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মামুনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল থেকে রিলিজ হয়ে আহত অবস্থায় তিনি সকালে মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মিলপাড়া এলাকার মৃত খবির উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম, একই এলাকার মৃত সামছুল মন্ডলের ছেলে রেজাউল মন্ডল এবং মৃত আবুল কালামের ছেলে শাহীন আলী। আগামীকাল বুধবার (৮ মে) প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচনে আবু আহাদ আল মামুন মোটরসাইকেল প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
আতাউর রহমান আতা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আবু আহাদ আল মামুন বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের বড় স্টেশনের সামনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুন তাঁর ফুফু মাহমুদা আক্তারের বাড়ির সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট কিভাবে সেট করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। এ সময় আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে অস্ত্র নিয়ে মামুনের ওপর হামলা করে।
আসামিরা তাকে হত্যার চেষ্টা করে। কুষ্টিয়া পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কিশোর কুমার ঘোষের নেতৃত্বে জোরপূর্বক টানা-হেঁচড়া করে অপহরণের চেষ্টা করে তারা। এ সময় আসামিরা তাকে গালাগাল করে এবং নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলে।
মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মামুন বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কারণে আমার ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে।
আমাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে অপহরণের চেষ্টা করে তারা। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। জড়িত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এর আগে চেয়ারম্যান প্রার্থী জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আবু আহাদ আলম মামুন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। এ বিষয়ে ওই প্রার্থী তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট দিয়ে ভয়ে আত্মগোপনে থাকার কথা জানান। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কাউন্সিলর কিশোর কুমার ঘোষের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।