1. [email protected] : শেয়ারখবর : শেয়ারখবর
  2. [email protected] : Admin : Admin
  3. [email protected] : nayan : nayan
  4. [email protected] : news uploder : news uploder
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে ‘হিট স্ট্রোকে’ মারা যাচ্ছে পশু-পাখি

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

দুই দশক পর রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপপ্রবাহ আরও কয়েকদিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে, তীব্র গরমে স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে পশু-পাখি। বিশেষ করে মুরগি, বক ও চাষের ইঁদুর মারা যাচ্ছে। বকগুলো গাছ থেকে পড়ে যাচ্ছে। এসব প্রাণী বাঁচাতে পানি পান করানো ও স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। এরআগে ২০০৫ সালের ২ জুন রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৪৯ সাল থেকে দেশে তাপমাত্রার রেকর্ড শুরু হয়। এরমধ্যে ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

আরও কয়েকদিন এ তাপপ্রবাহ বিরাজ করবে। এরপর কিছুটা কমে আসবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, সরেজমিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রে দেখা গেছে, সেখানকার গাছে বাস করা বক গরমে গাছ থেকে পড়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তাদের পানি দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে আবারও গাছে উড়ে যাচ্ছে।

সেখানে ঘুরে দেখা গেছে, অন্তত ১৫-২০টি পাখির মরদেহ পড়ে আছে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেই একটি পাখি গাছ থেকে পড়ে যেতে দেখা গেলো। সেখানকারই এক কর্মচারী রাসেল সেটিকে ধরে নিয়ে বোতলে করে পানি পান করালেন। এর কিছুক্ষণ পর সেটি আবার উড়ে গাছে চলে গেলো।

রাসেল বলেন, ‘প্রতিদিনই অনেক পাখি পড়ে মারা যাচ্ছে। যেগুলো আমার চোখের সামনে পড়ে না, সেগুলো বেজি ও অন্যান্য প্রাণী ধরে খেয়ে ফেলছে। তবে আমরা দেখতে পারছি, সেগুলোকে পানি পান করিয়ে দিলে আবারও গাছে উঠে যেতে পারছে।’

তিনি বলেন, ‘দিন যত যাচ্ছে পাখি তত বেশি পড়ছে। আগে দিনে দু-একটা করে পড়তো। এখন বেশি পড়ছে। অন্তত ৩০টির বেশি পাখি পড়ছে গাছ থেকে।’

রাজশাহীর শৌখিন ইঁদুর চাষি সালাউদ্দিন মামুন। তিনি বলেন, ‘গরমে প্রতিদিনই দু-একটি করে ইঁদুর মারা যাচ্ছে। এতে ইঁদুর সংকট দেখা দিচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছি না।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য পালন করা হয়েছিল বেশকিছু মুরগি। তবে গত তিনদিনে অন্তত ২০টি মুরগি মারা গেছেন। এসব মুরগি ‘হিট স্ট্রোকে’ মারা গেছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন সরদার বলেন, ‘গরমে হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে মুরগি। এগুলোকে রক্ষার জন্য দিনে তাপমাত্রা কমাতে পানি, ভেজা বস্তা ও ভিটামিন সি জাতীয় খাবার দিতে হবে। তবেই তারা কিছুটা সারভাইব করতে পারবে।’

তিনি বলেন, সাধারণত আমরা একটি মুরগির জন্য এক বা দেড় ফুট জায়গা রাখি। গরমের সময় সেটি দুই থেকে আড়াই ফুট করলে বেশ ভালো হবে। এটি করা গেলে মুরগির হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, সোমবার (২৯ এপ্রিল) পর্যন্ত প্রায় ১৬০০ মুরগি মারা গেছে। আমরা এগুলো থেকে রক্ষার জন্য চাষিদের নির্দেশনা দিচ্ছি। হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। তারা এগুলো মেনে চললে আমাদের পশুপাখীদের হিট স্ট্রোক ঠেকানো সম্ভব।

জেলা সিভিল সার্জন আবু সাঈদ মো. ফারুক বলেন, রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত হিট স্ট্রোকে কেউ মারা যাননি। আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ