1. [email protected] : শেয়ারখবর : শেয়ারখবর
  2. [email protected] : Admin : Admin
  3. [email protected] : nayan : nayan
  4. [email protected] : news uploder : news uploder
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ অপরাহ্ন

প্রচণ্ড জ্বর ও গায়ে ব্যথায় ভুগছেন, ম্যালেরিয়ার লক্ষণ নয় তো?

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কমবেশি সবাই এখন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গুতে আবার কেউ কেউ সাধারণ ফ্লুতে। মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের মধ্যে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া খুবই মারাত্মক। এ কারণে সবারই সাবধান থাকতে হবে। অনেকেই হয়তো এখন জ্বর-শরীর ব্যথাকে সাধারণ ভাবছেন, তবে এগুলো হতে পারে ম্যালেরিয়ারও লক্ষণ।

ম্যালেরিয়া একটি প্রাণঘাতী রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর ২০ কোটির বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। ২০১৬ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে। মশাবাহিত এই রোগটির প্রাদুর্ভাব ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায় মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত।

ম্যালেরিয়া কেন হয়?

ম্যালেরিয়া হচ্ছে মশাবাহিত প্লাজমোডিয়াম পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট রোগ। এটি কেবল সংক্রমিত স্ত্রী অ্যানোফেলিস মশার কামড়ে হয়। এ পর্যন্ত ৬০ এর অধিক প্রজাতির ম্যালেরিয়া পরজীবী আবিষ্কার করা সম্ভব হলেও এর মধ্যে ৪টি প্রজাতি মানুষের ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী।

প্লাজমোডিয়াম ভাইভাক্স, ফ্যালসিপ্যারাম, ম্যালেরি ও ওভাল-এর যেকোনো একটি জীবাণু বহনকারী মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হতে পারে। এর মধ্যে ফ্যালসিপ্যারাম ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে মারাত্মক। যা মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। সংক্রমিত মশা যখন কোনো ব্যক্তিকে কামড়ায়, তখন ওই ব্যক্তির রক্তে ম্যালেরিয়া জীবাণু প্রবেশ করে ও সে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়।

ম্যালেরিয়া কেন মারাত্মক?

মশার দ্বারা সংক্রমিত ম্যালেরিয়া রোগটি কিভাবে প্রাণঘাতী রোগ হয়ে উঠলো, এ বিষয়ের অজানা তথ্য উঠে এসেছে রোগটির ওপর জেনেটিক গবেষণায়। ক্যামব্রিজের ওয়েলকাম স্যাংগার ইন্সটিটিউটের গবেষকদের নেতৃত্বে এক গবেষণায় জানা যায়, এ পরজীবীটির বংশতালিকা অনুযায়ী ৭ ধরনের ম্যালেরিয়ার বিষয়ে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

সেখানে তারা দেখতে পেয়েছেন, প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে জীবাণুটি রূপান্তরিত হয়ে রোগের নতুন একটি শাখায় রূপান্তরিত হয়। যা মানব জাতির জন্য মারাত্মক সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নেচার মাইক্রোবায়োলজি নামে জার্নালে এই গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

জ্বর

নির্দিষ্ট সময় পরপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা এ রোগের প্রধান লক্ষণ। জ্বর সাধারণত ১০৫-১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। নিয়মিত ও নির্দিষ্ট বিরতিতে জ্বর আসা-যাওয়া করে।

যেমন- একদিন পর পর জ্বর, তা ৩-৪ দীর্ঘ হওয়া ও এরপর ঘাম দিয়ে জ্বর কমে যায়। জ্বর ছেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যেতে পারে।

শরীরে ব্যথা

মাঝারি থেকে তীব্র কাঁপুনি বা শীত শীত অনুভব, গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথাব্যথা, অনিদ্রাও দেখা দেয় ম্যালেরিয়া হলে।

ক্ষুধামন্দা-কোষ্ঠকাঠিন্য

একই সঙ্গে খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া বা ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমিবমি ভাব অথবা বমি, হজমে গোলযোগে ভোগে রোগী।

তলপেটে ব্যথা অনুভব

অত্যধিক ঘাম হওয়া, খিঁচুনি, পিপাসা লাগা, ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভব করা, মাংসপেশি, তলপেটে ব্যথা অনুভব, প্লীহা ও যকৃত বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।

রক্তশূন্যতা

ম্যালেরিয়া হলে লোহিত রক্তকণিকা ধ্বংস হওয়ার কারণে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। ম্যালেরিয়া রোগের জটিলতম ধরন হলো ‘ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া’। সাধারণ ম্যালেরিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখে দেয়।

যেমন- রক্তশূন্যতা, কিডনি বৈকল্য, শ্বাসকষ্ট হওয়া, জন্ডিস, খিঁচুনি, রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। জরুরি চিকিত্সা না পেলে এসব রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে, এমন কি মৃত্যুও হতে পারে।

রোগ নির্ণয় ও ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা

ম্যালেরিয়া সন্দেহ হলে অবশ্যই আগে পরীক্ষা করাতে হবে। যদি ম্যালেরিয়া ধরা না পড়ে; তাহলে পরপর তিন দিন পরীক্ষাটি করতে হবে। যদি ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয় তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে যা করবেন

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এ রোগ সম্পূর্ণ প্রতিকার ও প্রতিরোধযোগ্য। মশাবাহিত রোগ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হলে সচেতন থাকতে হবে। মশার কামড় থেকে দূরে থাকাই এ রোগ প্রতিরোধের উপায়।

জন্য দিনে বা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি বা কয়েল ব্যবহার করতে হবে। দরজা-জানালায় জাল, প্রতিরোধক ক্রিম, স্প্রে ব্যবহার করুন। ঘরের আশপাশে কোথাও যেন পানি জমে মশা বংশবিস্তার না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

আজ বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল দিনটি পালন করা হয়। বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস মূলত মশাবাহিত রোগটি নিয়ে সচেতনতা প্রচারের উদ্দেশ্যেই পালন করা হয়। এই দিনটির জন্য চলতি বছর যে থিম নির্বাচন করা হয়েছে তা হলো, একটি বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়ে তুলতে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার করতে হবে।

২০০১ সাল থেকে আফ্রিকার সরকার এই বিশেষ দিনটি পালন করে। তবে সেই সময় দিনটি বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস ছিল না। ছিল আফ্রিকা ম্যালেরিয়া দিবস। ২০০৮ সালে তার নাম বদল হয়। নেপথ্যে ছিল একটি আন্তর্জাতিক বৈঠক।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির ৬০তম অধিবেশনে আফ্রিকার এই বিশেষ দিনটিকে আন্তর্জাতিক দিবসের মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব ওঠে। সেই থেকেই প্রতিবছর ২৫ এপ্রিল পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস।

সূত্র: বিবিসি/হেলথলাইন

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ