ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিনেও দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে রাজধানীর অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র জাতীয় চিড়িয়াখানায়।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা যায়, জুমার নামাজের পর থেকেই সেখানে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। বিকেল চারটার পর দর্শনার্থীদের চাপ আরও বাড়ে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু-কিশোর। নিয়মিত চিড়িয়াখানা রুটে চলাচল করে না, এমন বাসকেও এদিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী পরিবহন করতে দেখা গেছে।
তবে যাত্রী পরিবহন করা এসব বাসকে চিড়িয়াখানার গেটে যত্রতত্রভাবে পার্কিং করে রাখতে থাকতে দেখা যায়। এতে গেটের সামনে বাসের জটলা তৈরি হয়। এছাড়া চিড়িয়াখানা গেট সংলগ্ন ফুটপাত ও সড়কে ছিল হকারদের ভিড়। যে কারণে মূল ফুটপাত ছেড়ে সড়ক দিয়ে হাঁটাচলা করতে হচ্ছে দর্শনার্থীরদের। তারা ভিড় ঠেলে চিড়িয়াখানার মূল ফটকে আসছেন।
চিড়িয়াখানার প্রবেশ গেট ও বের হওয়ার গেটে দর্শনার্থীর প্রচুর ভিড় চোখে পড়েছে। টিকিট কাউন্টারেও ছিল মানুষের জটলা।
চৈত্রের প্রচণ্ড গরমে চিড়িয়াখানায় আসা দর্শনার্থীদের ও খাঁচার প্রাণীদের হাঁসফাঁস করতে দেখা যায়। বেশিরভাগ প্রাণীকে শুয়ে-বসে বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। বিশ্রাম নেওয়া প্রাণীদের জাগাতে প্রাণান্ত চেষ্টা ছিল শিশু-কিশোরদের। দুপুরের রোগে একটু বিশ্রাম নিতে দর্শনার্থীরা গাছের ছায়াকে আশ্রয় করেন।
‘লায়…ন, লায়ন উঠো, ঘুম থেকে উঠো’- আফ্রিকান সিংহের খাঁচার সামনে এভাবেই সিংহ সুসান ও সিংহী লিলির দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল চার বছরের শিশু সানজিদ। তবে শিশুটির ডাক উপেক্ষা করে সিংহ দুটো বিশ্রাম নিচ্ছিল। শিশুদের কোলে-কাঁধে নিয়ে সিংহ দেখাচ্ছিলেন অভিভাবকরা।
শিশু সানজিদের মামা বলেন, বাসা থেকে বলে আসছে সে সিংহ ও বাঘ দেখবে। এখন খাঁচার সামনে এসে ডাকাডাকি করছে।
চিড়িয়াখানায় এদিন বাঘ, ভাল্লুক, গাধা, ওয়াটারবাক, হরিণ, বানর এসব প্রাণীর খাচার সামনে শিশুদের ভিড় বেশি ছিল।
‘ঈদের সময় আইলে মাইনসের মাথা দেখতে পারবা, প্রাণী দেখতে পারবা না। হেরা (প্রাণীরা) বেশি মানুষ দেখলে ডরায়। হাঁটাচলা করে না’- প্রাণীদের বিশ্রাম নিতে দেখে স্ত্রীকে এমনটাই বলছিলেন পোশাককর্মী আরিফ।
তিনি বলেন, চিড়িয়াখানায় আইছি দুপুর ১২টার দিকে। অনেক কিছু দেখছি। ভেতরে খাওয়া-দাওয়া করছি। কিন্তু বেশিরভাগ প্রাণী বিশ্রাম নিচ্ছে।
কল্যাণপুর থেকে মা-বাবার সঙ্গে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসেন সাত বছরের শিশু আফিফ। তার সঙ্গে কথা হলে জানায়, বানর, ময়ূর, সিংহ দেখে তার অনেক ভালো লেগেছে।
জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের দ্বিতীয় দিন লক্ষাধিক দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। দুপুরের পর ভিড় বাড়তে শুরু করে।
তিনি বলেন, চিড়িয়াখানার প্রাণীদের চাঙ্গা রাখতে ও তাদের সুস্থ রাখতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আমরা নিজেরাও কাজ করছি।