পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে খাতভিত্তিক পিই রেশিও সবচেয়ে কম দেখা গেছে ব্যাংক খাতে। গত সপ্তাহ শেষে পুঁজিবাজারের পিই রেশিও ছিল ১২ দশমিক ১৫, যেখানে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৭। এর পরও চলতি বছরের শুরু থেকে বিনিয়োগকারীদের এ খাতের শেয়ারে খুব একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন ও আর্থিক পারফরম্যান্সের দুর্বলতার কারণে এ খাতে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ পাচ্ছেন না। এছাড়া ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর খুব একটা ওঠানামা না করায় এ খাতে আগ্রহ কমে গেছে বিনিয়োগকারীদের।
খাতভিত্তিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ব্যাংক খাতের শেয়ারে বেশির ভাগ সময়ে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ব্যাংক খাতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, এ সময় ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে দশমিক ১ শতাংশ। পরের সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৩৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে ১ দশমিক ১ শতাংশ। তৃতীয় সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ২৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, এ সময় নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে দশমিক ২ শতাংশ। চতুর্থ সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৯২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে ৩ শতাংশ। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৫৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে দশমিক ১ শতাংশ। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ১০৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, ইতিবাচক রিটার্ন হয়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। দ্বিতীয় সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ১৯৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে দশমিক ৭ শতাংশ। চতুর্থ সপ্তাহে দৈনিক গড়ে লেনদেন ৮২ কোটি ৮০ লাখ টাকা, নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে দশমিক ৪ শতাংশ। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৭৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে দশমিক ৩ শতাংশ। মার্চের প্রথম সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৫০ কোটি ২৯ লাখ টাকা শেয়ার লেনদেন হয়েছে, নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে ১ দশমিক ১ শতাংশ। দ্বিতীয় সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৩৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। সর্বশেষ গত সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ৩০ কোটি ৮১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, এ সময়ে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে দশমিক ১ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ কতটা নিরাপদ সেটি পরিমাপ করার অন্যতম নির্দেশক হলো মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও। কোনো কোম্পানির পিই রেশিও বেশি হলে সেটিতে বিনিয়োগের ঝুঁকি বেশি থাকে। অন্যদিকে পিই রেশিও যত কম বিনিয়োগের ঝুঁকির পরিমাণ কমে যায়।
গত সপ্তাহে অন্যান্য খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পিই রেশিও বেড়েছে বিবিধ খাত, সিরামিক ও মিউচুয়াল ফান্ডের। এ সময়ে খাত তিনটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৩৮ দশমিক ৩৭, ৩৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। এছাড়া গত সপ্তাহে পাট খাতে ২৯ দশমিক ৩৮, ভ্রমণ ও অবসর খাতে ২৫ দশমিক ২৮, চামড়া শিল্প খাতে ২৪ দশমিক ৯৬, কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ২৪ দশমিক শূন্য ১, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২২ দশমিক ৪৬, প্রকৌশল খাতে ২১ দশমিক ২১, সেবা ও রিয়েল এস্টেট খাতে ১৮ দশমিক ৫৩, বীমা খাতে ১৭ দশমিক ২৪, বস্ত্র খাতে ১৬ দশমিক ৩৯, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ১৬ দশমিক ১৭, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৪ দশমিক ৬৫, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৩ দশমিক ৭৫, সিমেন্ট খাতে ১৩ দশমিক ৪১, টেলিকম খাতে ১৩ দশমিক শূন্য ১ এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ৯ দশমিক ৮৮ পিই রেশিও ছিল।