শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড ২০২০ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। এরপর ২০২২ সালে কোম্পানিটি জিরো কুপন বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে আরও ২০৭ কোটি টাকা উত্তোলন করেছিল।
কোম্পানিটির আইপিও অর্থ এবং জিরো কুপন বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের ব্যয় পর্যালোচনার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিন সদস্যের একটি পরিদর্শন কমিটি গঠন করেছে।
কমিটির আহ্বায়ক হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন। কমিটির সদস্যরা হলেন উপ-পরিচালক মোঃ শাহনৌস ও সহকারী পরিচালক মোঃ আরিফুল ইসলাম। কমিটিকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের আইপিও এবং জিরো-কুপন বন্ডের আয়ের ব্যবহার পরীক্ষা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বিএসইসি মীর আক্তার হোসেনকে ব্যবসা সম্প্রসারণ, সরঞ্জাম ক্রয় এবং ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য বুক-বিল্ডিং পদ্ধতির অধীনে আইপিওর মাধ্যমে ১২৫ কোটি টাকা সংগ্রহের অনুমতি দেয়।
বিডিংয়ের পর মীর আক্তারের শেয়ারের কাট-অফ মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৬০ টাকা। যা বর্তমানে ৪৫ টাকার ঘরে লেনদেন হচ্ছে।
আইপিও তহবিল ১৮ মাসের মধ্যে ব্যবহার করার কথা ছিল। তবে নির্মাণ ও প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানটি গত বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আইপিওর কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
এদিকে, ২০২২ সালের মার্চ মাসে কোম্পানিটিকে ঋণ পুনঃঅর্থায়ন এবং মূলধনের ভিত্তি বাড়ানোর জন্য ২৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকার জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করার অনুমতি দেওয়া হয়। বন্ডের ইস্যু মূল্য ছিল ২০৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এই পর্যায়ে কোম্পানিটির আইপিও অর্থ ও জিরো কুপন বন্ডের অর্থের ব্যবহার যাচাই করার জন্য কমিটি গঠন করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মীর আক্তারের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, ৯ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার ৩৩টি চলমান প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন, পায়রা নদীর উপর সেতু নির্মাণ এবং সারাদেশে কিছু সড়ক প্রকল্প।
২০২১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে কোম্পানির ব্যবসায়িক কর্মক্ষমতা কমে যায়। তবে কোম্পানিটির একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত রয়েছে। কারণ এটি বড় বড় অনেক সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
বার্ষিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটি বলেছে, সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট থেকে মূলধন বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে নির্মাণ খাত লাভবান হচ্ছে। যার ফলে কোম্পানিটিরও লাভবান হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।