দেশের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা না মানায় তালিকাভুক্ত কোম্পানি কাট্টলী টেক্সটাইল মিলের প্রতি পরিচালককে ১ কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তবে কোম্পানিটির স্বাধীন পরিচালকদের জরিমানা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদন ও ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দেওয়ার জন্য কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছিল এবং স্বাধীন ও মনোনীত পরিচালকদের ছাড়া অন্য পরিচালকদের প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
এই বিষয়ে বিএসইসির এক কর্মকর্তা জানান, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে কমিশন ২০১৯-২০, ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য কোম্পানির আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনা করার জন্য কাট্টলি টেক্সটাইল মিলের ইসলাম জাহিদ এবং কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে বিশেষ নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়।
ছয় বছর আগে উত্থাপিত কোম্পানির প্রাথমিক পাবলিক অফার (আইপিও) তহবিলের কতটা ব্যবহার করা হয়েছে তাও নিরীক্ষক পরীক্ষা করবেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, কোম্পানিটি তার আইপিও তহবিল সঠিকভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাছাড়া এই বিষয়ে বিশেষ নিরীক্ষককে সহযোগিতা করেনি।
গত বছরের এপ্রিলে কোম্পানিটি বিএসইসিকে জানায় যে তার সার্ভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অডিটরকে সহযোগিতা করার জন্য দায়ী কর্মকর্তা কয়েক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
এজন্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক পোশাক রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ অডিট সমাপ্তির জন্য ১২০ দিন বাড়ানোর আবেদন করেছিল।
কাট্টলি টেক্সটাইল কেন তাদের আইপিও তহবিল ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছে তা জানতে গত বছরের অক্টোবরে বিএসইসি তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
২০১৮ সালে কোম্পানিটি মূলধনী যন্ত্রপাতি ক্রয়, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার স্থাপনের জন্য আইপিওর মাধ্যমে ৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। ছয় বছর পরও তহবিলটি অব্যবহৃত রয়ে গেছে।
এদিকে, বিনিয়োগকারীরা ২০২২ সালের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে এর ব্যবসা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, কোম্পানিটি এরপর আর কোন আর্থিক প্রকাশ করেনি।
কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ঘোষিত ডিভিডেন্ডও বিতরণ করেনি বলে কমিশনে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ রয়েছে।
কমিশন কাট্টলি টেক্সটাইলের আইপিও তহবিল ব্যবহারে বারবার ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করার জন্য ২০২১ অর্থবছরের ডিভিডেন্ড বিতরণ এবং এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আর্থিক বিবরণী প্রকাশ না করার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জুনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আপত্তি সত্ত্বেও বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিও আবেদন অনুমোদন করেছিল।